পৃথিবীর বায়ুমন্ডল কত বড়?

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বলতে পৃথিবীর চারপাশে ঘিরে থাকা বিভিন্ন গ্যাস মিশ্রিত স্তরকে বোঝায়, যা পৃথিবী তার মধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা ধরে রাখে। একে আবহমণ্ডল- বলা হয়। এটি সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করে। এটি তাপ ধরে রাখার মাধ্যমে (গ্রীনহাউজ প্রতিক্রিয়া) ভূপৃষ্টকে উত্তপ্ত করে দিনের তুলনায় রাতের তাপমাত্রা হ্রাস করে। বায়ুমণ্ডলকে চোখে দেখা যায় না, শুধু এর অস্তিত্ব আমরা অনুভব করতে পারি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে এই বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর আবর্তনের সঙ্গে আবর্তিত হয়

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে মোটামুটিভাবে প্রায় ১০,০০০ কিমি পর্যন্ত বায়ুমন্ডলের অস্তিত্ব আছে বলে মনে করা হয় । বায়ুমন্ডলের ভর প্রায় ×১০১৮ কেজি যার তিন চতুর্থাংশ পৃষ্ঠের প্রায় ১১ কিলোমিটারের (৩৬,০০০ ফুট . মাইল) মধ্যে থাকে।উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমন্ডল পাতলা হতে থাকে এবং বায়ুমণ্ডল মহাশূন্যের মধ্যে কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই।


ব্যারোমিটারের উদ্ভাবক বিজ্ঞানী টরিসেলি বলেন, বিশাল এক বায়ুসমুদ্রের তলদেশে আমরা ডুবে আছি।আসলে সত্যিই কি তাই? চলুন জেনে আসি বিস্তারিত।

এই বিশাল বায়ু সমুদ্রে আমরা কিন্তু ছোট্ট পিঁপড়ার মতো বসবাস করছি। আর পৃথিবী নামক গ্রহটি আমাদেরকে নিয়ে মহাকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। আর পৃথিবীর চারপাশ ঘিরে আছে বায়ুমন্ডল। যার চার ভাগের তিন ভাগই আছে ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটারের মধ্যে। খুব অদ্ভুত শোনাচ্ছে তাই না?


পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের একটি রেখার নাম কারমান রেখা। একে বহিস্থ মহাকাশ আর পৃথিবীর মধ্যের সীমানা ধরা হয়। এর দূরত্ব পৃথিবীর ব্যাসার্ধের ১.৫৭ অংশ। তবে মহাকাশযান পৃথিবীতে ফিরে আসার সময় কিন্তু ১২০ কিলোমিটার দূরে থাকতেই বায়ুমন্ডলের কণার সঙ্গে ধাক্কা খেতে শুরু করে। এ ধাক্কায় যেন ক্ষতি না হয় সে জন্যও মহাকাশযানে বিশেষ ধরনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থাকে। তাহলে পৃথিবীর বায়ুমন্ডল আসলে কোন পর্যন্ত? ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ESA) এ কাজে ব্যবহার করেছে সোহো অবজারভেটরির ২০ বছরের পুরোনো উপাত্ত। তারা জানিয়েছে, পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একেবারে বাইরের অঞ্চলের নাম জিওকরোনা। আর এ জিওকরোনার বিস্তৃতি চাঁদের সীমানা থেকেও বহুদূরে। জিও কথার অর্থ পৃথিবী। আর করোনা মানে মুকুট। অর্থাৎ জিওকরোনার অর্থ দাঁড়ায় পৃথিবীর মুকুট।

জিওকরোনার কথা বিজ্ঞানীরা আগেও জানতেন। জানতেন, এটা মূলত হাইড্রোজেন পরমাণু দিয়ে গঠিত। তবে ঠিক কত দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে সেটা জানা ছিল না। এবার জানা গেল চাঁদের কক্ষপথ থেকেও প্রায় দ্বিগুণ দূরত্ব পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব হলো লাখ ৮৪ হাজার কিলোমিটার। আর জিওকরোনার বিস্তৃতি লাখ ৩০ হাজার কিলোমিটার। দূরত্বটা পৃথিবীর ব্যাসের ৫০ গুণ। তার মানে চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে পাক খাচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ভিতরে থেকেই।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন