বিশ্বের সবথেকে রহস্যময়ী মন্দির, যে মন্দিরে গেলেই ‘নিশ্চিত মৃত্যু’

বিশ্বজুড়ে রহস্যের অন্ত  নেই। মনে হতে পারে সারা পৃথিবীটাই যেনো রহস্যের চাদরে মোড়া। বিশ্ব-মহাবিশ্বের  এমন কিছু জায়গা রয়েছে যার রহস্য আজও কোন মানুষ তো দূরে থাক বিজ্ঞানীরাও আজ পর্যন্ত আবিস্কার করতে পারেন নি। এই জায়গাগুলো আর পাঁচটা জায়গার থেকে আলাদা বলেই মনে করা হয়। শুধুমাত্র বিশেষ কিছু কারণের জন্যই এই জায়গাগুলো আলাদা হয়ে থাকে। তেমনই একটি জায়গা হলো হিরাপোলিস।  

ছবিঃ সংগৃহীত

প্রিয় ভিউয়ার্স কথা বলবো হিরাপোলিসে অবস্থিত বিশ্বের সবথেকে রহস্যময়ী প্রাচীন প্লুটোর মন্দির নিয়ে। যে মন্দিরে গেলে নিশ্চিত মৃত্যূ হয় দশর্ণাথীর।


তুরস্কের অন্যতম প্রাচীন শহর হিরাপোলিস। এখানেই রয়েছে একটি প্রাচীন মন্দির, যাকে নরকের দরজা (দ্য গেট অব হেল) বলে অভিহিত করা হয়। কথিত আছে, যে এই মন্দিরের কাছাকাছি যে যায় তারই মৃত্যু নাকি অবধারিত। এই মন্দিরে কেউ প্রবেশ করলে তার আর কোনো খোঁজ মেলে না। 

সায়েন্স অ্যালার্ট ডটকম অনুসারে, জায়গাটিকে নরকের দ্বার বলা হয়। কারণ, গত কয়েক বছর ধরে এই মন্দিরে যারাই যাচ্ছেন, তাদের রহস্যময় মৃত্যু হচ্ছে। এমনকি, এই মন্দিরের কাছাকাছি কোনো প্রাণী গেলেও তার মৃত্যু হচ্ছে। 

স্থানীয়দের মতে, এই মন্দিরে থাকা গ্রিক দেবতার বিষাক্ত নিশ্বাসেই মৃত্যু হচ্ছে এর সংস্পর্শে আসা সমস্ত প্রাণীদের। জানা যায়, গ্রিক-রোমানের রাজত্বকালে এই মন্দিরে নরবলি দেওয়া হতো।

বলা হয় এই মন্দিরের সংস্পর্শে এলে মানুষ, জন্তু, এমনকি পাখিদেরও মৃত্যু অবধারিত। আর তার জন্যই এই মন্দিরের গেটকে দ্য গেট অব হেল বলেন স্থানীয়রা। 

এই মন্দিরকে প্লুটোর মন্দির বলা হত। প্লুটো মৃত্যুর ছিলেন দেবতা অনেক বছর পর্যন্ত মানুষের মনে এই বিশ্বাস ছিল যে, মৃত্যুর দেবতার রোষের কারণে এই মন্দিরের আশেপাশে কেউ গেলে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনা যখন অনবরত ঘটতে থাকে তখন সেখানকার মানুষজন মন্দিরের আশেপাশে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। পর্যটকেরা সেখানে যাওয়া চেষ্টা করলে, স্থানীয় মানুষেরা তাঁদের আটকে দিত। হেরাপোলিস শহরের পাহাড়ি এলাকায় থাকা এই মন্দির প্রাচীন রোমান শহরের অংশ। কোন পর্যটক সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তাঁদের হাতে খাঁচায় বন্দি একটি পাখি দিয়ে দিত। ওই পাখি মন্দিরের সীমানায় যাওয়ার কয়েক মিনিট পর মারা যেত। আর সেটা দেখেই পর্যটকেরা মন্দিরে যাওয়ার ইচ্ছে ছেড়ে দিত।

২০১৮ এর ফেব্রুয়ারি মাসে জানা যায় যে রহস্যময়ী মন্দিরের নীচে একটি গুহা আছে। যেখানে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস মজুত আছে। এর সাথে সাথে অনেক রকম বিষাক্ত গ্যাস ওই গুহার মধ্যে আছে। ওই মন্দিরে প্রায় ৯১ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস আছে যার ফলে সেখানে যাওয়ার মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। কার্বন ডাই অক্সাইড মন্দিরের গুহার মধ্যে থাকে আর সেখান থেকে মন্দিরের ভিতরে গ্যাস ছড়িয়ে যায়। আর এই গ্যাসের সংস্পর্শে আসলেই মানুষ কেন, যেকোন প্রাণীর মৃত্যু অনিবার্য।

অদ্ভুত এই মন্দিরকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে রহস্য দানা বেঁধেছে পর্যটক থেকে বিজ্ঞানীদের মনে। তবে, মৃত্যুর এই রহস্যের মাঝে কেউ সামনে থেকে দেখতে যাওয়ার সাহস পান না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন