মুদি দোকানের ব্যবসা করে সফল হওয়ার উপায়

সফলতা এমনি আসে না। পরিশ্রম, বুদ্ধি হচ্ছে সফলতার অন্যতম উপায়।  ব্যবসায় কিন্তু সকলেই খুব সহজে সফল হতে পারে না। সফলতার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য্য। কথা বলছি মুদি দোকান ব্যবসায় কিভাবে সফল হবেন সেই বিষয় নিয়ে। মুদি দোকানের মূল বৈশিষ্ট্য হলো এই ব্যবসায় ‍ুযিনি মালিক তিনিই পরিচালক। অর্থাৎ মুদি দোকান হলো একক মালিকায় পরিচালিত একটি ব্যবসা।  একক মালিকানা বলে এই ব্যবসায় কোন জটিলতা নেই।  এই ব্যবসার লাভ-ক্ষতি সব মালিককেই একা বহন করতে হয়।



মুদি দোকানের ব্যবসায় সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু টিপস্ মেনে চলতে হবে। তো চলুজন জেনে আসি মুদি দোকানের ব্যবসায় সফল হওয়ার টিপসগুলো কি কি?


১) সঠিক পণ্য নির্বাচন: মুদি দোকানে সফল হতে হলে আপনাকে সবার আগে সঠিক পণ্য নির্বাচন করতে হবে। মুদি দোকানের আইটেম তালিকা সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে আপনি সফল হতে পারবেন না। আর এর জন্য আপনাকে সঠিকভাবে মুদি দোকানের আইটেম তালিক তৈরি করতে হবে। আইটেম তালিকা তৈরি করার পর সেই আইটেমগুলো বাজার চাহিদা যাচাই করতে হবে।


২) স্থান নির্বাচনঃ- মুদি দোকান ব্যবসা শুরুর আগেই আপনাকে স্থান নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ মুদি দোকানটি কোথা থেকে পরিচালনা করবেন সেটা আপনাকে ঠিক করতে হবে। দোকানটি কি বাজারে হবে নাকি কোন রাস্তার মোড়ে? স্কুল-কলেজ আছে এমন জায়গায় নাকি মসজিদের পাশে হবে? যেখানে লোক সমাগম বেশি সেখানে দিবেন নাকি আপনি বাড়ির সামনেই একটা মুদি দোকান দিয়ে বসে পড়বেন। মনে রাখবেন, একটি ব্যবসায়ে মুনাফা ও সফলতা নির্ভর করে ঐ এলাকার লোকসংখ্যার উপর। তাই সফলতার দরজা বলা যেতে পারে এই স্থান নির্বাচনকে।


৩) ডেকোরেশনঃ- কথায় আছে “আগে দর্শণধারী পরে গুণবিচারি”। একজন ব্যবসায়ি বা উদ্যোক্তা হিসাবে আপনার মনে রাখতে হবে মানুষ সুন্দরের পূজারি। তাই আপনার দোকানটি সুন্দর করে সাজিয়ে নিন। দোকানের ডেকোরেশন এমনভাবে করুন যাতে কাস্টমার দূর থেকে দেখেই আপনার দোকানের দিকেই এগিয়ে আসে। মনে রাখবেন একটা সুন্দর দোকান কাস্টমারকে আর্কশন করে বেশি। আর ডেকোরেশন সুন্দর হলে কিন্তু কাস্টমারের সংখ্যাও বাড়তে থাকবে।


৪) নিজেকে মানিয়ে নিনঃ- মনে রাখবেন, ব্যবসা করতে গেলে প্রতিনিয়ত নানা প্রতিকূল  পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। সব কাস্টমারের কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতা সমানভাবে নাও থাকতে পারে। অনেক কাস্টমার হয়তো অকারণে আপনার ওপর চটে যেতে পারে। বাকি নিয়ে হাওয়া হয়ে যেতে পারে। আর এহেন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তা মানিয়ে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায় সফলতা তাদের কাছেই ধরা দেয় যারা সবসময় মানিয়ে নিতে পারে।



৫) ঝুঁকি কমানোঃ-  ব্যবসা যখন করতে যাবেন তখন ঝুঁকির বিষয়টিও মাথায় রাখবেন। সবসময় সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হয়তো অসম্ভব হতে পারে তবে ঝুঁকি কমানোর জন্য আপনাকে সবকিছু নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদিও ঝুঁকি গ্রহণ ছাড়া খুব সহজেই আপনি সফল হতে পারবেন না।।


৬) ক্রেতার দিকে মনোযোগি হওয়াঃ- যে কোন ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে কিন্তু তার গ্রাহক বা কাস্টমার। আর তাই ক্রেতার সন্তুষ্টির দিকে যেকোন উদ্যোক্তার সবার আগে নজর দেওয়া উচিৎ। ক্রেতার সঙ্গে কখনো খারাপ ব্যবহার করবেন না। তাদের সামনে হাসি মুখে থাকুন ,হাসি মুখে কথা বলুন, গ্রাহককে খুশি করার চেষ্টা করুন।


৭) কম দামে বেশি বিক্রিঃ- ব্যবসায়ি হিসেবে নিজের লাভের কথা না ভেবে, আপনার গ্রাহক বা ক্রেতা কেমন দামে আপনার পণ্যটি কিনতে চায় সেটা নিয়ে একটু ভাবুন। অর্থাৎ কম দামে বেশি বিক্রি করুন।  মনে রাখবেন, আপনার গ্রাহকগণ বা ক্রেতাগণ সব সময় চাইবে ''যেখানে একটু কম দাম পাবো ,সেখানেই পণ্য কিনবো'' তাই পণ্যগুলো একটু কম দামে বিক্রি করার চেষ্টা করুন। যেমন ধরুন, কেউ একটা পণ্য ১০ টাকায় কিনে ১৫ বা ১৪ টাকায় বিক্রি করে ৪-৫  টাকা লাভ করে। সেক্ষেত্রে, আপনি ঐ ১৪/১৫ টাকার মালটাই ১২ কিংবা ১৩ টাকায় বিক্রি করুন ,২/৩ টাকা লাভ করুন – গ্রাহক আপনার কাছেই আসবে। 


৮) সততাঃ- সৎ ভাবে ব্যবসা করুন, সুন্দর জীবন গড়ুন। মনে রাখবেন আপনার সততা হলো আপনার ব্যবসায়ের মুনাফার অংশ। কাস্টমারকে দেখা মাত্র হাসিমুখে সালাম দিয়ে কথা বলুন। তাদের সাথে এমন আচরণ করা যাবে না যাতে করে দ্বিতীয়বার  তারা আর আপনার দোকানে আসতে না চায়। কাস্টমারে সাথে কখনোই রেগে কথা বলবেন না। এমন করলে কিন্তু তাদের কাছ থেকে ফিডব্যাক পাবেন না।


৯) কাস্টমারকে গুরুত্ব দেওয়াঃ- “Customer is allways right”. এই বিষয়টি আপনার মাথায় গেঁথে নিতে হবে। কাস্টমারের কোন ভুল ধরতে যাবেন না। মনে রাখবেন প্রতিটা পরিবারের খরচের একটা বিশাল অংশ কিন্তু মুদি দোকানেই চলে যায়। কোন গ্রাহক যদি একবার বুঝতে পারে যে, আপনি তাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন তাহলে কিন্তু সে বার বার আপনার দোকানে চলে আসবে খরচ নিতে। তাই কাস্টমার বা গ্রাহককে যথেষ্ট গুরুত্ব দিন।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন