যে কোন পদেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে নিয়োগকর্তারা যাদের নিয়োগ দিবেন তাদের মধ্যে কিছু দক্ষতা খুঁজে থাকেন এবং আপনার মধ্যে যদি এই দক্ষতাগুলো থাকলে আপনি নিয়োগকারীদের কাছে আরও বেশি যোগ্য হয়ে উঠতে পারেন। নিয়োগকর্তারা সাধারণত যোগাযোগ, সমস্যা সমাধান এবং দলবদ্ধভাবে কাজ করার মতো দক্ষতাগুলো প্রার্থীদের মধ্যে খোঁজেন, যা কোম্পানী বা সংস্থার লক্ষ্য অর্জন এবং ফলাফল অর্জনের জন্য মূল্যবান হতে পারে।
আজকের এই ভিডিওতে, আমরা নিয়োগকর্তারা আবেদনকারীদের মধ্যে যে ৬টি শীর্ষ দক্ষতা খুঁজে থাকেন তা নিয়ে আলোচনা করব, কীভাবে আপনি এই দক্ষতাগুলো তুলে ধরতে পারেন তা অন্বেষণ করব এবং নিয়োগকারী পরিচালকদের কাছে নিজেকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য টিপস প্রদান করব।
প্রিয় ভিউর্য়াস আপনার জীবনবৃত্তান্ত এবং কভার লেটারে আপনার সবচেয়ে সেরা যোগ্যতা ও দক্ষতাগুলো এমনভাবে তুলে ধরবেন যাতে করে নিয়োগকর্তারা দ্রুত বুঝতে পারবেন যে আপনি একজন প্রার্থী হিসেবে কী অফার করতে পারেন। আপনার যোগ্যতা, দক্ষতা যত বেশি প্রাসঙ্গিক হবে, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে আপনি তত বেশি প্রাসঙ্গিক ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবেন। মনে রাখবেন, যদিও প্রত্যেকটি পদের জন্য আলাদা আলাদা নির্দিষ্ট দক্ষতার প্রয়োজন হতে পারে, তবুও সমস্ত পেশায় কিছু মূল দক্ষতা রয়েছে। এগুলোকে মূল নিয়োগযোগ্যতা দক্ষতা হিসাবে বিবেচনা করা হয় যা আপনাকে আরও কার্যকর প্রার্থী হতে সাহায্য করতে পারে।
১. যোগাযোগ দক্ষতা: যোগাযোগ দক্ষতা প্রায়শই যেকোনো কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিয়োগকর্তারা সম্ভবত এমন দলের সদস্যদের চান যারা তাদের কাছ থেকে যা চাওয়া হচ্ছে তা সফলভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন এবং অন্যদের সাথে কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনার জীবনবৃত্তান্তে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সাধারণ যোগাযোগ দক্ষতার মধ্যে রয়েছে লেখা, কথা বলা, শোনা এবং আলোচনা করা।
২. নেতৃত্বের দক্ষতা: নেতৃত্ব হল এমন একটি সফট স্কিল যা অনেক নিয়োগকর্তা প্রার্থীদের মধ্যে খোঁজেন। নেতৃত্বের দক্ষতা আপনাকে অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে এবং বিদ্যামান কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে সহায়তা করে। আপনার জীবনবৃত্তান্ত বা সিভিতে সাধারণ নেতৃত্বের দক্ষতাগুলো উল্লেখ করতে ভুলবেন না। এরমধ্যে রয়েছে Active Listening Skills, নির্ভরযোগ্যতা, প্রতিক্রিয়া দেওয়ার এবং গ্রহণ করার ক্ষমতা এবং ধৈর্য।
৩. Teamwork skills বা দলগত কাজের দক্ষতা: টিমওয়ার্ক দক্ষতা যেকোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মরত কর্মীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ যারা কোনও প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার অংশ। যারা তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমে অন্যান্য ব্যক্তির সাথে কাজ করে থাকে। আপনার চাকরির পদ বা প্রতিষ্ঠান যাই হোক না কেন, অনেক নিয়োগকর্তা একটি খালি পদের জন্য আবেদনকারীদের পর্যালোচনা করার সময় টিমওয়ার্ক দক্ষতাকে অগ্রাধিকার দেন। টিমওয়ার্ক দক্ষতারগুলোর মধ্যে রয়েছে সহযোগিতা, সততা, যোগাযোগ এবং দায়িত্ব।
৪. সাংগঠনিক দক্ষতা বা Organizational skills: সাংগঠনিক দক্ষতা একজন কর্মীর উৎপাদনশীলতা, সময় ব্যবস্থাপনা এবং লক্ষ্য অর্জন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যেকোনো পেশাগত পদে এগুলো উপকারী এবং নিয়োগকর্তাদের কাছে অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দক্ষতার মধ্যে রয়েছে পরিকল্পনা, critical thinking, মনোযোগ এবং দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনা বা conflict management.
৫. কম্পিউটার দক্ষতা: বর্তমানে প্রযুক্তির এই যুগে প্রায় প্রতিটি পেশাতেই কোন না কোন ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার প্রয়োজন হয়। অনেক চাকরির জন্য কম্পিউটার সম্পর্কে আরও গভীর জ্ঞানের প্রয়োজন হয়, তাই আপনার জীবনবৃত্তান্ত বা সিভিতে কম্পিউটার দক্ষতা অন্তর্ভুক্ত করলে নিয়োগকর্তারা জানতে পারবে যে, আপনি কমপক্ষে কম্পিউটারের মৌলিক বিষয়গুলির সাথে পরিচিত। আপনি যে চাকরির জন্য আবেদন করছেন তার জন্য যদি আরও উন্নত কম্পিউটার দক্ষতার প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনার জীবনবৃত্তান্ত বা সিভিতে এই দক্ষতাগুলি তুলে ধরা উচিত। কম্পিউটার দক্ষতার মধ্যে রয়েছে ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার, পাওয়ার পয়েন্ট, স্প্রেডশিট, সোশ্যাল মিডিয়া, ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং ইমেল যোগাযোগের দক্ষতা ইত্যাদি।
৬. Problem-solving skills সমস্যা সমাধানের দক্ষতা: সমস্যা সমাধানের দক্ষতা কর্মক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি উৎপাদনশীল এবং ইতিবাচকভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। এই দক্ষতাগুলি এমন কর্মীদের জন্য কার্যকর হতে পারে যারা একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে বা একটি দলের অংশ হিসাবে কাজ করেন। আপনার জীবনবৃত্তান্তে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন এমন সাধারণ সমস্যা সমাধানের দক্ষতাগুলো হল যোগাযোগ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং গবেষণা দক্ষতা।
মনে রাখবেন নিয়োগকর্তারা আবেদনকারীর যোগ্যতা ও দক্ষতা কয়েকটি ভিন্ন জায়গায় খুঁজে থাকেন, যেমন আপনার জীবনবৃত্তান্ত, কভার লেটার এবং সাক্ষাৎকারের সময়। এই প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনার দক্ষতা তুলে ধরার সময় এখানে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে:
আপনার জীবনবৃত্তান্তে প্রাসঙ্গিক দক্ষতা উল্লেখ করুন
আপনার সেরা দক্ষতাগুলো তুলে ধরার সবচেয়ে ভালো জায়গা হল আপনার জীবনবৃত্তান্তের "দক্ষতা" বিভাগ বা "Skills" section। আপনি আপনার দক্ষতাগুলোকে বুলেটযুক্ত ফর্ম্যাটে তালিকাভুক্ত করতে পারেন এবং একটি সিভিতে একটা সংক্ষিপ্ত বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
আপনার কভার লেটারে আপনার আবেদন করা চাকরির সাথে সম্পর্কিত সবচেয়ে সেরা দক্ষতার মধ্যে দুই থেকে তিনটি উল্লেখ থাকতে পারে। আপনার কভার লেটারের মূল অংশে এই দক্ষতাগুলো অন্তর্ভুক্ত করার কথা বিবেচনা করতে পারেন এবং আপনার পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতায় আপনি কীভাবে এই দক্ষতাগুলোকে ব্যবহার করেছেন তার উদাহরণ দিতে পারেন।
সাক্ষাৎকারের সময় আপনার দক্ষতা শেয়ার করুন। মনে রাখবেন চাকরির সাক্ষাৎকার হল নিয়োগকর্তার সাথে আপনার সেরা দক্ষতা সম্পর্কে খোলামেলাভাবে কথা বলার জন্য একটি দুর্দান্ত সময়। সাক্ষাৎকারের সময়, আপনি অতীতে আপনার দক্ষতা কীভাবে ব্যবহার করেছেন তার উদাহরণ দিতে পারেন। পদের সাথে প্রাসঙ্গিক সমস্ত দক্ষতা উল্লেখ করার চেষ্টা করুন, বিশেষ করে চাকরির বিজ্ঞাপনে যে দক্ষতাগুলো বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন