গ্রাহকঃ ধরণ এবং তাদের গুরুত্ব

আজকে কথা বলছি গ্রাহক তথা কাস্টমারের ধরণ বা প্রকৃতি এবং তাদের গুরুত্ব নিয়ে। মূল আলোচানায় যাওয়ার আগে আমরা সংক্ষিপ্ত করে জেনে আসবো গ্রাহক কাকে বলে? কারা হন আপনার গ্রাহক?

গ্রাহক হলো তারাই যারা সেবা কেনেন। আর আপনার কাছ থেকে যারা পণ্য বা সেবা কিনছেন তারাই হলো আপনার গ্রাহক।

খুব সাধারণ ভাবে বলা যায়, গ্রাহক হলো কেবলমাত্র একটি পৃথক সত্ত্বা। গ্রাহক সাধারণত নির্দিষ্ট ব্যক্তি, একক ব্যক্তি, যৌথ ব্যক্তি হতে পারে। একজন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ি হিসেবে আপনাকে মনে রাখতে হবে, গ্রাহকদের আয় সীমিত এবং এই সীমিত আয় দিয়েই বিক্রেতার কাছ থেকে সর্বাধিক সন্তুষ্টমুলক সেবা তারা প্রত্যাশা করেন। গ্রাহকগণ প্রত্যক্ষ পরোক্ষাভাবে বিক্রেতার কাছ থেকে পণ্য পরিষেবা গ্রহণ করেন। গ্রাহকগণ সাধারণত এমন সব পণ্য ক্রয় করেন যা তাদের জীবনযাত্রার উন্নতি ঘটাতে সহায়তা করে।


গ্রাহকের ধরণ বা প্রকারভেদ বা প্রকৃতি: গ্রাহকের প্রকৃতি, ক্রয় ক্ষমতা, ইচ্ছা ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে আমি গ্রাহকের কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করেছি। চলুন জেনে আসি বিস্তারিত।

 

সম্ভাব্য গ্রাহকঃ সম্ভাব্য গ্রাহক হলো তারা যারা একটা নির্দিষ্ট চ্যানেলের মাধ্যমে আপনার পণ্য ক্রয় করে থাকে। এসব গ্রাহকগণ আপনার প্রকৃত গ্রাহক না হলেও উৎকৃষ্ট গ্রাহক সেবা এবং গুণগত পণ্য পেলে এসব গ্রাহক একটা সময়ে গিয়ে নিয়মিত গ্রাহকে পরিণত হন। ভালো সেবা পেলে তারা প্রথমদিকে আগ্রহ দেখিয়ে থাকে হতে পারে সেটা কোন যোগাযোগ ফর্ম পূরণ করে, কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার তথ্য পেয়ে বা লাইভ দেখে। 

 

প্রত্যক্ষ গ্রাহকঃ প্রত্যক্ষ গ্রাহক হলো তারা যারা মৌলিক চাহিদা সমূহ যেমন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এবং চিকিৎসা সমূহ তাদের নিজের এবং পরিবারের ব্যবহারের জন্য তৈরি করে। তাদের কে প্রত্যক্ষ ভোক্তা বা প্রত্যক্ষ উৎপাদনকারীও বলা হয়। 

 

নতুন গ্রাহকঃ নতুন বা তাজা গ্রাহক  হলো সেই যে  আপনার কাছ থেকে সবেমাত্র কিছু কিনেছে। তিনি এখনও আপনার পণ্য ব্যবহার করেননি তবে করবেন। যদিও আপনি ইতিমধ্যে পণ্যটি  বিক্রি করেছেন।, কিন্তু উদ্যোক্তা হিসাবে কিংবা ব্যবসায়ি হিসাবে আপনাকে মনে রাখতে হবে- নতুন গ্রাহক যদি কোন পণ্য খুঁজে না পান সেক্ষেত্রে আপনার ব্যবসার সুনাম কিছুটা হলে ক্ষুন্ন হতে পারে।

 

আধুনিক গ্রাহকঃ এই ধরণের গ্রাহকরা কেবলমাত্র অর্থের বিনিময়ে কেনা যায় এমন পণ্য এবং পরিষেবাদি কিনতে বাজারে যান। এখানে, উৎপাদকগণ সরাসরি গ্রাহকদের জন্য বাজারে প্রেরিত পণ্য বা পরিষেবদি উৎপাদন করেন। এই গ্রাহকরা অর্থের বদলে সমস্ত পণ্য পরিষেবা কিনে থাকেন। 

 

ডিসকাউন্ড গ্রাহকঃ এমন অনেক গ্রাহক আছেন যারা পণ্যের মান দেখেন কিন্তু সঠিক দামে কিনতে চান না। এক্ষেত্রে যে পণ্যে ছাড় চলছে তার বিশদ বিবরণ দিয়ে আপনি তাকে পণ্যটি কিনতে সহায়তা করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছাড় মূল্যে যে পণ্য বা পরিষেবা দিচ্ছেন  ছাড়টি বন্ধ হয়ে গেলে কিছু গ্রাহক সাধারণত চলে যায়। এমন ছাড়ের গ্রাহককে গ্রাহক হিসেবে দীর্ঘদিন রাখতে হলে আপনাকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তিনি কেবল ছাড়ের সঙ্গে শুধু প্যণ্যই পাচ্ছেন না, ক্রয়ের সঙ্গে তিনি উৎকৃষ্ট গ্রাহকসেবাও পাচ্ছেন।

 

বিশ্বস্ত গ্রাহকঃ এই ধরণের গ্রাহকের চলে যাবার সম্ভাবনা কম বরং ক্ষেত্র বিশেষে তারা আরও অনেক অপরিচিত গ্রাহককে সাথে নিয়ে আসেন। এরা আপনার ব্যবসার সুনাম ছড়িয়ে দেবার পাশাপাশি আপনার পণ্যের ব্র্যান্ড দূতও হতে পারেন।

 

প্রিয় পাঠক, এবার আমরা গ্রাহকের গুরুত্ব সম্পর্কে জানবো

 

বাজার ব্যবস্থায় গ্রাহকের গুরুত্বঃ

গ্রাহকরা সমস্ত পণ্য সামগ্রীর চাহিদার মূল উৎস। শিল্পজাত পণ্য বা কৃষিজাত পণ্য উৎদকরা সবাই বাজারে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন আইটেম উৎপাদন করেন। গ্রাহকরা সব ধরণের ভোগ্যপণ্যের জন্য যেমন টেকসই, আধা-টেকসই এবং পচনশীল পণ্যগুলির জন্য আরও চাহিদা তৈরি করে। টেকসই ভোগ্যপণ্যের মধ্যে রয়েছে আসবাব, পাত্র, টেলিভিশন ইত্যাদি এবং অর্ধ-টেকসই জিনিস যেমন পোশাক, বই, জুতা ইত্যাদি। স্বাভাবিকভাবেই, এগুলি গ্রাহক সামগ্রীর চাহিদা বাড়ানোর জন্য একটি পরিবেশ তৈরি করে। গ্রাহকরা কেবল বিভিন্ন জাতের পণ্যই কিনে না, জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে বিভিন্ন ধরণের পরিষেবাও গ্রহণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষামূলক পরিষেবা, ব্যাংকিং বীমা পরিষেবা, পরিবহন যোগাযোগ পরিষেবা ইত্যাদি। এটি অর্থনীতির মধ্যে পরিষেবা খাতের সম্প্রসারণ বা বর্ধনের দিকে পরিচালিত করে।

বিঃদ্রঃ ছবি অনলাইন থেকে সংগৃহীত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন